আর পারছিনা !! আর চুপ করে থাকাটা ঠিক হবে না। আজকে আমার এ ব্যাপারে কিছু বলা দরকার :
প্রথমে তুলে ধরছিইলসাম এবং এর অনুসারী মুসলমানদের বিরুদ্ধে বিধর্মীদের এক সুনিপুন ষড়যন্ত্র মূলক কিছু কথা :
.........................................................""""""""""
লর্ড বার্নার্ড' শ বলেছিলেন, "ইসলাম হচ্ছে শ্রেষ্ঠ ধর্ম এবং মুসলমানরা হচ্ছে সর্ব নিকৃষ্ট অনুসারী।"
.........................................
"ইসলামিক দেশগুলি কতখানি ইসলামিক এই নিয়ে গবেষণা করেন জর্জ ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক হুসেন আসকারী। ইসলাম ধর্মে রাষ্ট্র ও সমাজ চলার যে বিধান দেয়া হয়েছে তা যে দেশগুলি প্রতিদিনের জীবনে মেনে চলে তা খুঁজতে যেয়ে দেখা গেলো,-- যারা সত্যিকার ভাবে ইসলামিক বিধানে চলে তারা কেউ বিশ্বাসী মুসলিম দেশ নয়।
স্টাডিতে দেখা গেছে সবচেয়ে ইসলামিক বিধান মেনে চলা দেশ হচ্ছে নিউজিল্যান্ড এবং দ্বিতীয় অবস্থানে লুক্সেমবার্গ। তারপর এসেছে পর্য্যায়ক্রমে আয়ারল্যান্ড, আইসল্যান্ড, ফিনল্যান্ড, ডেনমার্ক ষষ্ঠ ও কানাডা সপ্তম অবস্থানে। মালয়েশিয়া ৩৮তম, কুয়েত ৪৮তম, বাহরাইন ৬৪তম, এবং অবাক করা কান্ড সৌদি আরব ১৩১তম অবস্থানে। গ্লোবাল ইকোনমি জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণায় বাংলাদেশের অবস্থান সৌদীদেরও নীচে।
গবেষণায় দেখা গেছে, মুসলমানরা নামাজ, রোজা, সুন্নাহ, কোরআন, হাদিস, হিজাব, দাড়ি, লেবাস নিয়ে অতি সতর্ক কিন্তু রাষ্ট্রীয়, সামাজিক ও পেশাগত জীবনে ইসলামের আইন মেনে চলেনা।
..............................................""""""""""""""""".................................
এবার সবার আগে বলুন যে এই মুসলিমদের খেলাফত, রাষ্ট্র , সরকার ব্যবস্থা , সমাজ , সংস্কৃতি সর্বমোট কত শত বছর এই বিধর্মী ষড়যন্ত্র কারীদের মাথাব্যথার কারণ হয়েছিল। আর সেই সময়টাতে মুসলমানদের মধ্যে পাশ্চাত্যের বিধর্মীদের এরকম উদ্ভট বক্তব্যকে প্রশ্রয় দিয়ে প্রচার করে নিজ জাতিকে ঘৃণা করার হীনমন্যতা ছিল কিনা। নাকি ব্যাপারটা ছিল পুরোপুরি উল্টো। মানে মুসলমানদের নিজেদের ধর্মের প্রতি আনুগত্য , তাদের , শিক্ষা , সংস্কৃতি , শরিয়া , সরকার ব্যবস্থা , সমাজ ব্যবস্থা, বিজ্ঞান , চিকিৎসা, ব্যবসা , আধুনিক স্থাপত্য কলা ইত্যাদি বিভিন্ন ক্ষেত্রে মুসলমানদের অগ্রগতি দেখে বিধর্মীরা নিজেদের সম্পর্কে এধরণের ধারণা পোষণ করতো !!?
লক্ষ্য করে দেখুন , যেদিন থেকে আমরা মুসলমানেরা ঠিক এইভাবে আমাদের আলেমে দিন, প্রসিদ্ধ ইমাম গণ , নিজেদের শরিয়া , কুরআন , হাদিস থেকে দূরে সরে গিয়ে বা তাদেরকে অগ্রাহ্য করে বার্নার্ডশ এর মতো এরকম আরো অনেক বিধর্মী মনীষী, বিজ্ঞানী, রাজনীতিবিদ, ব্যাবসায়ী , ধর্মযাজক প্রভৃতি জনের ইসলাম এবং ইসলামের অনুসারী মুসলমানদের সম্পর্কে তাদের হাস্যকর অব্জার্ভেশনকে বিশ্বাস করতে শুরু করেছি তখনথেকেই আমাদের , মানে মুসলমানদের পতনের শুরু হয়েছে। এখন আমরা মুসলমানেরা ক্লিনটন, বুশ , ওবামা এই তিন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট এর ছবি পোস্ট দিয়ে তার নিচে অনেক আবেগ ভরা কোথায় লিখি এরাই নাকি প্রকৃত ইসলামিক নিয়মে নিজেদের দেশকে পরিচালিত করেছেন। আমি বেশি জুটি তর্ক আর বিশ্লেষণ মূলক কথা বলে আপনাদের সময় নষ্ট করবো না। কারণ, আমি জানি অনেক মুসলমান ভাই পাশ্চাত্যের প্রচারমাধ্মের চাকচিক্য ভরা চেহারা আর তার বিপরীতে বর্তমান মুসলিম দেশ গুলোর দুর্বলতা গুলোকে তুলে ধরে , তাদেরই "বিজ্ঞগণের" দেয়া বিশ্লেষণে একেবারে বিমোহিত হয়ে আছেন। আপনাদের কথা কি বলবো !! আমি নিজেইতো সারাজীবন ইংরেজি শিখবো, ইংরেজি শিখবো , আমেরিকান কিংবা ইংরেজদের মতো করে ইংরেজি বলবো করে এসেছি। তার দশভাগের এক ভাগ আগ্রহ তো আমি আরবি শেখার জন্যে কখনো প্রকাশ করিনি। যাইহোক , বর্তমান বাস্তবিকতার সাপেক্ষেই সব মুসলমান ভাইদের একটি হিসাব করতে অনুগ্রহ করছি। যেকোনো মুসলিম প্রধান এবং মোটামুটি ইসলামিক আইন মেনে চলা দেশের সমাজ এর সাথে যেকোনো অমুসলিম দেশের সমাজের একটি তুলনা করতে বলছি। মুসলিম বিশ্বের সবচাইতে দুর্বল সামাজিক এবং রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থার একটি দেশ তুলে নিন, এই ধরুন আফগানিস্তান, লিবিয়া অথবা সিরিয়া। আর এবার বিধর্মীদের উন্নত বিশ্বের আপাত দৃষ্টিতে সবচাইতে শান্তিময় কোনো দেশ তুলেনিন। ধরুন নিউজিল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, ডেন্মার্ক্, লুক্সমেম্বারগ , কানাডা বা আপনার যেটা ইচ্ছা। এবার একজন মুসলমান হিসেবে চিন্তা করুন কোন দেশের সামাজিক ব্যবস্থাতে ইসলামিক নিয়ম রীতি পালনে , আপনার সন্তানকে পুরোপুরি ইসলামিক রীতিতে লালন পালন এবং শিক্ষা প্রদানে আপনি বেশি সাবলীল !!? ........পোশাক-আশাক এবং চাল-চলনে অশালীনতা, অবাধ যৌনাচার, বিবাহ বহির্ভুত সম্পর্ক, বৈবাহিক সম্পর্কের অস্থিতিশীলতা, পারিবারিক এবং আত্মীয়তার সম্পর্কের দুর্বল অবস্থা, বর্ণ বৈষম্য এবং ধর্ম বৈষম্য মূলক অপরাধ , সমকামিতার মতো নিকৃষ্ট ধ্বংসাত্মক অপরাধ কোন দেশগুলোর সমাজে বেশি !!? ....................................................................
শেষ করবো আমার ব্যাক্তিগত একটি অভিজ্ঞতা দিয়ে। একদিন আবুধাবি এর মেরিনা তে আরেকজন বাংলাদেশির সঙ্গে হাটছি। সকালের রৌদ্রোজ্জ্বল সুন্দর পরিবেশ। এর মাঝে দেখা হলো বেশ বয়স্ক এক জার্মান দম্পত্তির সাথে। তারা নিজেথেকেই আমাদের ফোন নিয়ে দুজনের এক সাথে ছবি তুলে দিলেন। তারপর অনেকটা মিষ্টি সুরে একটা অভিযোগ করে বসলেন। " এটা না তোমাদের মুসলমানদের দেশ !!? তাহলে আমরা যে হোটেলে উঠেছি , সেখানে রাতের বেলা কেন এতো হৈ - চৈ, মিউজিক , নাচানাচি আর ওই সব !!? আমরাতো এই দেশে একটু শান্তিময় পরিবেশ ভেবে এসেছি " এই ধরণের একটি অভিযোগ।
আমার প্রগলভ বাংলাদেশী মন এই অপমানটা সহ্য করে অথবা মেনে নিয়ে মোটামুটি একটা উত্তর দিয়ে দিলাম , "আসলে আমাদের দেশ বাংলাদেশ এটা নয়। এটা আরব আমিরাত, কাগজে কলমে যদিও মুসলমানদের দেশ তবে তারা পাশ্চাত্য সংস্কৃতিকেই নিজেদের করে নিয়েছে হয়তো। "
সেই সফরেই দুবাইতে একটি বিশাল বিপণিবিতানে লিফটের সামনে গিয়ে দাঁড়াতেই এক মার্কিন বা কানাডিয়ান মহিলা বেশ ক্রুর শোর আমাদের ভর্ৎসনা করতে লাগলেন , ওহীল চেয়ার এ বসা তার মা কিংবা বাবাকে পাশ কাটিয়ে কেন আমরা লিফটের সামনে এসে দাঁড়ালাম, অথচ এতো মানুষের মাঝে ব্যাপারটা আমরা লক্ষই করিনি। আমি তার কাছে বার বার ক্ষমা প্রার্থনা করতে করতে লক্ষ্য করলাম, সেই পাশ্চাত্যে মহিলাটি আমাদের ক্ষমা প্রার্থনার প্রতি কোনো ভ্রুক্ষেপই করছেন না , বরং আরো কিছুক্ষন তার ক্ষোভ ঝেড়ে তার বাবা কিংবা মা কে লিফটে উঠিয়ে বিদায় নিলেন , অনেকটা বিজয়ীর বেশে।
শেষ কথা হলো তেরোশো বছরের মুসলিম খিলাফতের শৌর্য এবং পরাক্রমতার কাছে তাদের হেরে যাওয়া এবং পিছিয়ে থাকাটা , আমাদের কেউ কেউ ভুলে গেলেও এই বিধর্মীরা , এই বিধর্মী মনীষীরা ভুলে যায়নি। তারা সব সময়ই চায় যাতে দুর্বল ঈমানের মুসলমানেরা নিজেদের ব্যাপারে তাদেরই চাপিয়ে দেয়া এরকম চায়ভুগে মানসিক ভাবে দুর্বল হয়ে , তাদেরকে আদর্শ হিসেবে বেছে নেই। তাছাড়া কিছুদিন আগে শুনলাম পবিত্র কুরআন শরীফে উল্লেখ করা আছে যে ইহুদি-নাসারাগণ ততক্ষন পর্যন্ত কোনো মুসলমানের উপরে খুশি হবেন না যতক্ষণ না সে তাদের ধর্মের অনুসারী না হন। নাউযুবিল্লাহ বিন জালিক। আল্লাহ আমাদেরকে বুঝার তৌফিক দেন করুন। আমিন।